ARPANET : ইন্টারনেটের পূর্বসূরী
ARPANET : ইন্টারনেটের পূর্বসূরী
ARPANET এর পূর্ণরূপ Advanced Research Projects Agency Network। এটি একটি
প্রাথমিক প্যাকেট-সুইচিং নেটওয়ার্ক এবং প্রোটোকল স্যুট টিসিপি/আইপি
বাস্তবায়ন করে এমন প্রথম নেটওয়ার্ক। আরপানেটের বিকাশ যোগাযোগের ডিজিটাল
যুগের সূচনা করে এবং আজকের দিনের বৈশ্বিক ইন্টারনেটের ভিত্তি স্থাপন
করে।
প্রেক্ষাপট
সোভিয়েতের সাথে কোল্ড ওয়ারের সময় সৃষ্ট Advanced Research Project Agency
(ARPA) এর মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ ARPANET এর
অর্থায়ন করে। এর লক্ষ্য ছিল মার্কিন সামরিক বাহিনীর কমান্ড ও কন্ট্রোল
সিস্টেমকে সুরক্ষিত রাখা এবং পেন্টাগন-অর্থায়নকৃত গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটারগুলোকে সংযুক্ত করা।
সূচনা
প্রাথমিক ধারণা:
ARPANET এর মূল ধারণাটি ছিল এমন একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা যা বিভিন্ন স্থানে
গবেষকদের রিসোর্স (তথ্য) শেয়ার করা এবং একে অপরের সাথে সহজে ও দ্রুততম সময়ে
যোগাযোগ করার সুবিধা দিতে পারবে।
প্যাকেট সুইচিং পদ্ধতি:
ফোন লাইনে ব্যবহৃত প্রথাগত সার্কিট-সুইচিং ব্যবহার করার পরিবর্তে, আরপানেট
ছিল প্যাকেট-সুইচিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা প্রথম নেটওয়ার্ক, যেখানে ডেটাকে
প্যাকেট আকারে বিভক্ত করে গন্তব্যে প্রেরণ করা হতো এবং সেখানে তা পুনরায়
একত্রিত করা হতো। ফলে যেমন দক্ষতার সাথে ডাটা আদান-প্রদান করা যায়, তেমনই নেটওয়ার্ক সংযোগ ব্যায়ও হ্রাস পায়
ইন্টারফেস মেসেজ প্রসেসর:
এই ডেডিকেটেড মিনিকম্পিউটারগুলি ব্যবহার করে কম্পিউটারগুলি ARPANET-এর সাথে
সংযুক্ত ছিল, যা আজকের দিনের রাউটারের মতো কাজ করে।
ক্রমবিকাশ
প্রথম সংযোগ:
লস এঞ্জেলসের ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া (UCLA) এবং স্ট্যানফোর্ড
রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (SRI) মধ্যে প্রথম ARPANET সংযোগটি ১৯৬৯ সালে তৈরি
হয়েছিল। পরে ইউ সি সান্তা বারবারা এবং উটাহ বিশ্ববিদ্যালয় যুক্ত হওয়া
প্রাথমিক চারটি নোড সম্পন্ন হয়।
নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি:
১৯৭০ এর দশকে, নেটওয়ার্কটি বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা
প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে প্রসারিত হচ্ছিল। গবেষকরা পারস্পরিক
সহযোগিতা এবং রিসোর্স শেয়ার করার জন্য ARPANET ব্যবহার করতেন।
TCP/IP:
১৯৮৩ সালে TCP/IP প্রোটোকল স্যুটের প্রবর্তন ARPANET-এর জন্য অপরিহার্য ছিল
কারণ এটি বিভিন্ন ধরণের নেটওয়ার্ককে আন্তঃসংযোগের অনুমতি দিয়েছিল, যা আজকের
ইন্টারনেটের একটি মৌলিক দিক। TCP/IP গ্রহণকে প্রায়শই আধুনিক ইন্টারনেটের
জন্ম হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।
ARPANET এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব শুধুমাত্র প্রযুক্তিতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং
আরো বিস্তৃত। এটি মানুষের যোগাযোগ সম্পর্কিত চিন্তাভাবনায় আমূল পরিবর্তন
এনেছে এবং আমাদের এই বর্তমান সংযুক্ত বিশ্বের ভিত্তি স্থাপন করেছে৷ ARPANET-এ
বিকশিত প্রোটোকল এবং নেটওয়ার্কিং কৌশলগুলি আজ আমরা যে ইন্টারনেট ব্যবহার করি
তার অপরিহার্য বিল্ডিং ব্লক হয়ে উঠেছে। এটি গবেষকদের একটি সম্প্রদায়কে
সংযুক্ত করে যারা নেটওয়ার্কিংয়ের প্রাথমিক মানগুলিতে অবদান রাখেন এবং
খোলাখুলিভাবে তথ্য ভাগ করে নেওয়ার সংস্কৃতির প্রচলন ও প্রসার ঘটায়, যা
ইন্টারনেটের একটি মৌলিক নীতি হিসাবে রয়ে গেছে।
#ARPANET #EssenceofTech
Follow my Facebook Page 'Essence of Tech' for more contents...
Comments
Post a Comment